নববর্ষের অঞ্জলি (একটি অনাথ মেয়ের চোখে)
ধানখেতের পাশে, কুঁড়েঘরের কোণে,
একটি মেয়ে বসে, মনটা তার বনে।
নেই বাবা-মা, নেই আদরের কোলে,
তবু স্বপ্ন দেখে, রঙিন ভবিষ্যতের চোলে।
পথে বাজে ঢাক, আলতা পায়ে চলা,
পড়শিরা হাসে, সাজে পা-আলা।
সে তাকিয়ে থাকে, একটু দূর হতে,
ইচ্ছে করে তারও, অঞ্জলি দিতে।
পুরোনো ফ্রকের ছেঁড়া কোণটাতে,
লুকিয়ে রাখে সে ফুল কয়েকটা হাতে।
ঠাকুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ,
ভক্তি জড়ানো চোখ, নয়নে একটু ভাব।
পুরুত মশাই হাসেন, বলেন, "এসো মা,"
তার ছোট্ট দুটি হাত জড়িয়ে ধূপের ছাঁ।
প্রথমবার অঞ্জলি, কেঁপে ওঠে বুক,
দেবী যেন বলেন, "তুইই আমার সুখ।"
প্রসাদ পায় হাতে, খুশির ঢল নামে,
ভগবানের আশীর্বাদ, যেন মায়ের নামেই।
এভাবেই সে মেলে, ছোট ছোট আশা,
অন্তরেতে বাজে, নববর্ষের ভাষা।
নেই গয়না, নেই ধন, তবু হৃদয় ভরা,
একটি অনাথ মেয়েও নববর্ষে ঘেরা।
তার চোখে নববর্ষ—ভক্তি, ফুল, আলো,
ভগবানই দেন তাকে, জীবনের নতুন ভালো।