পুজোতে নিজেকে সুন্দর করে তুলতে রইল কিছু টিপস
ঢাকে কাঠি পরতে আর মাত্র কয়েকদিন। বাঙালির প্রধান উৎসবের এই পাঁচদিন নতুনভাবে নতুনরূপে নিজেকে সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতি সকলেই শুরু করে দিয়েছেন প্রায়। তারই সাথে নিজের শরীরকেও সুন্দর রাখাটা খুবই জরুরি। তাই পুজোর আগে নিজেকে কিভাবে আরও সুন্দর করে তোলা যায় সেই বিষয়েই রইল কিছু টিপস।
প্রতিদিন যথাযথ পরিমাণে জল পান করুন। এতে আপনার ত্বকের ঔজ্জ্বল্য যেমন বাড়বে তেমনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করে শরীরকে সুস্থ রাখতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, এইসময় গরমে কাজের পাশাপাশি কেনাকাটা করতে যাওয়া লেগেই থাকে, তাই শরীরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুবই জরুরি। অবশ্যই চেষ্টা করুন যাতে ১০-১২গ্লাস জল নিয়মিত পান করেন। জলের সাথে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পানীয় অবশ্যই ডায়েটে রাখবেন যেমন ডাবের জল, লস্যি, ছাতুর সরবত, লেবুর সরবত বা বিভিন্ন প্রকার চা (দিনে ২-৩কাপ)। তবে পুজোর আগে যারা ওজন ঝরাতে চাইছেন তারা অবশ্যই চিনি থেকে নিজেদের দূরে রাখবেন।
পুজোর আগে কেনাকাটা করতে প্রায়ই বেরোতে হয়। আর গরমে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করতে করতে তেষ্টা পাওয়া টা খুবই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে তেষ্টা নিবারণের জন্য ভরসা করুন জল বা অন্য কোনো স্বাস্থ্যকর পানীয়তে। বাইরের কোল্ড ড্রিঙ্কস, সোডা বা অন্য কোনো মিষ্টি জাতীয় পানীয় থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। বাড়িতেও বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন বিভিন্ন প্রকার ভেষজ চা বা সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বাস্থ্যকর পানীয় বানিয়ে খেতে পারেন, যা আপনার হজম ক্ষমতাকে ভালো রাখতে বা এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করবে।
চেষ্টা করুন নিজের ডায়েট টা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুরু ও শেষ করতে এবং অল্প করে বার বার খেতে। এতে কোন খাবার কখন খাবেন সেটার হিসাবও যেমন সহজে করতে পারবেন, তেমনি খিদে কম পেলে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলার সম্ভাবনাও কম থাকবে।
সব্জি ফল যেন অবশ্যই প্রতিদিন আপনার ডায়েটে থাকে। এতে থাকা বিভিন্ন প্রকার অত্যাবশ্যকীয় নিউট্রিয়েন্স যেমন ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেলস ইত্যাদি আপনার ত্বকের জন্য, চুলের জন্য সর্বপরি আপনার শরীরের জন্য এবং আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট অবশ্যই খাবেন। ফ্যাট কিন্তু ত্বক কে মসৃণ রাখতে বা ত্বকের ন্যাচারাল ময়শ্চারাইজার হিসাবেও খুব ভালো কাজ করে। পুজোর কটা দিন ত্বকের জেল্লা থাকাটা খুবই জরুরি। তাই বিভিন্ন প্রকার বাদাম যেমন আমন্ড, চিনাবাদাম ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার সিডস্ অবশ্যই খাদ্য তালিকায় রাখবেন। ১চামচ ঘি ও ডায়েটে যোগ করতে পারেন। এর সাথে সাথে পুজোর আগের এই কদিন বিভিন্ন তেলেভাজা, ফাস্টফুড বা যেকোনো অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিজেকে অবশ্যই দূরে রাখুন, বিশেষ করে যারা পুজোর আগে ওজন ঝরাতে চাইছেন। শুধু তাই না, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন আপনার হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে, ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে তেমনি কিন্তু ত্বকের ঔজ্জ্বল্য কে কমিয়ে দেয়। ত্বকে র়্যাস ফুস্কুড়ি ইত্যাদিরও কারণ হতে পারে, যা পুজোর আগে কোনো ভাবেই কাম্য নয়। তাই এখন থেকেই সতর্ক হোন।
পুজোর আগে ওজন কমাতে চাইছেন যারা তারা সপ্তাহে ১-২ দিন লো-কার্বোহাইড্রেট ডায়েট ফলো করতে পারেন। বাড়িতে পাতা টক দই, স্যালাড নিয়মিত খাবেন। এগুলো হজম ক্ষমতাকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
সবশেষে পুজোয় নিজেকে সুন্দর করে তুলতে ডায়েটের সাথে যে কাজটা করতেই হবে তা হলো শরীরচর্চা। যা আপনাকে সাহায্য করবে ওজন ঝরাতে, আপনার হজম ক্ষমতাকে ভালো রাখতে এবং এনার্জি লেভেল কে ভালো রাখতে। পুজোর সময় এই প্রতিটা জিনিসই ঠিক থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত ৪৫-৬০ মিনিট শরীচর্চা করার।
এমনিতেই পুজোর কদিন আমাদের দৈনন্দিন রুটিন কিছুটা হলেও এদিক ওদিক হয়েই যায়। তাই যারা পুজোর আগে ওজন কমাতে চান বা যারা পুজোয় ওজন যাতে বেড়ে না যায় সেই নিয়ে চিন্তিত তারা অবশ্যই পুজোর আগে এই টিপস গুলো মেনে চলুন।