Logo
logo

ঘরে-বাইরে / লাইফস্টাইল

মহিলাদের স্বাস্থ্য সচেতনতার যে যে বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবেন

বর্তমান সমাজে মেয়েরা ঘর ও বাইরে সমানভাবে সামলাচ্ছেন। অনেক সময়ই দু-দিক সামলাতে গিয়ে নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়া হয়ে ওঠে না। ফলসরূপ বিভিন্ন প্রকার শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন তাদের অনেক কম বয়সেই হতে হয়, যেমন: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা, রক্তালপতা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, স্থূলতাজনিত সমস্যা ইত্যাদি। তাই সময় থাকতে থাকতে সতর্ক হওয়া প্রয়োজনীয়।

এরকমই কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে আজকের লেখা:-

১| মধুমেহ বা ডায়াবেটিস: বর্তমানে ডায়াবেটিস সারা বিশ্বজুড়ে বেশীরভাগ মানুষের চিন্তার কারণ। তাই শুরু থেকেই এই রোগের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। মাত্রাতিরিক্ত ডায়াবেটিস ভবিষ্যতে হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যার বড়ো কারণ হতে পারে।

কী কী করণীয়:-
▪︎খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। শর্করা ও শর্করাজাতীয় খাবারকে খাদ্যতালিকা থেকে দূরে রাখুন।

▪︎অত্যধিক তেল মশলাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

▪︎খাদ্যতালিকায় ফাইবার যুক্ত খাবারকে রাখুন।

▪︎যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা নিয়মিত সকালে মেথি বা চিরতা ভিজানো জল খান বা দুপুরে উচ্ছে, করলা সিদ্ধ বা নিমপাতা ভাজা ভাতের সাথে খান। ঘরোয়া টোটকা হিসাবে এগুলো শর্করা নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ দেয়।

▪︎নিজের সঠিক ওজনকে বজায় রাখুন।

▪︎নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।

▪︎জীবনযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।

২| রক্তালপতা:
আমাদের দেশে বহু মহিলাই আয়রনের অভাবজনিত রক্তালপতা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। মাসিক চক্রের সময় অত্যাধিক রক্তক্ষরণ, সঠিক পুষ্টির অভাব, সচেতনতার অভাব, ইত্যাদি নানা কারণে মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়ার প্রভাব পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

কী কী করণীয়:-
▪︎আয়রন ও ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার যেমন: বিভিন্ন প্রকার ডাল, বাদাম, ওটস, মুড়ি, বীযট, পালং শাক, ব্রকোলি, লেবু ইত্যাদি নিয়মিত খান।

▪︎কুলেখাঁড়া পাতার রস রক্তে হিমগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত এই রস খেতে পারেন।

▪︎মাছ, মাংস (বিশেষ করে লিভার, হার্ট, টেংরি), ডিম অবশ্যই ডায়েটে রাখুন।

৩| স্থূলতা:-
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে নারী পুরুষ উভয়ের কাছেই স্থূলতা একটি বড়ো সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতানুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ৪০% মহিলা অতিরিক্ত ওজনের শিকার ও ১৫% মহিলা স্থূলতার শিকার, যা পুরুষদের তুলনায় বেশী। অতিরিক্ত ওজন মহিলাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রকার শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে যেতে পারে, যেমন: হরমোনজনিত সমস্যা, হার্টের সমস্যা, উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি। তাই ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা অবশ্যই জরুরি।

কী কী করণীয়:-
▪︎কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত ও কম ফ্যাট জাতীয় খাবার ডায়েটে রাখুন।

▪︎সব্জি, ফল অবশ্যই ডায়েটে রাখুন।

▪︎বাইরের খাবার, অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।

▪︎অবশ্যই নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।

৪| পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম:-
বর্তমানে ১০ জন মহিলার মধ্যে ১ জন এই শারীরিক সমস্যার দ্বারা আক্রান্ত। এই শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে মহিলাদের শরীরে প্রজনন হরমোনগুলি সঠিকভাবে কাজ করে না। যারফলে ঋতুচক্রে সমস্যা, ওজন বেড়ে যাওয়া, সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মূলত ১৫-৪৫ বছরের মহিলারাই এই সমস্যা দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

কী কী করণীয়:-
▪︎কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত ও কম ফ্যাট জাতীয় খাবার ডায়েটে রাখুন।

▪︎অত্যধিক তেল মশলাজাতীয় খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

▪︎ডায়েটে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার যুক্ত খাবার রাখুন।

▪︎নিয়মিত শরীর চর্চা, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদি করুন।

▪︎ঘুম (প্রতিদিন অন্তত ৬-৭ ঘন্টা) যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে নজর রাখুন।

▪︎সুস্থ জীবনযাত্রার মান যাতে বজায় থাকে সেদিয়ে অবশ্যই নজর রাখুন।

মূলত এই শারীরিক সমস্যাগুলি দ্বারা বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ মহিলারাই কম বেশি আক্রান্ত হন। কিন্তু শুরুতেই যদি একটু সতর্ক হওয়া যায় তাহলে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্ভব। তাই অবশ্যই নিয়মিত সঠিক ডায়েট মেনে চলুন, শরীর চর্চা করুন এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলুন।

Contact US

Tel: 9903329047 / 8697419047
Email: sreemotirdarbar@gmail.com