সম্পাদকের মননে
নারীদিবস নাকি নারী the boss!একটা অনুষ্ঠানের শেষ অংশটুকুতে একজন সঞ্চালিকা এই কথাটাই বলছিলেন..... একদম আমার মনের কথা।
চকোলেট দিবস,ভালোবাসা দিবস,হাগ ডে ( বঙ্গানুবাদ নিয়ে চাপ আছে).....ব্যাঙের ছাতার মতোন নানা দিবসের প্রাদুর্ভাব ঘটে থাকলেও নারীদিবস নিয়ে অহেতুক আদিখ্যেতা না দেখানোই ভাল।
কারণ পুরুষ এগিয়ে না নারী? নাকি নারী-পুরুষ সমান অধিকার? এসব এখন ক্লিশে সাবজেক্ট। বহুচর্চিত, বহুআন্দোলিত ও বহু বিতর্কিত একটি বিষয়। আমি নারীবাদী তকমা না সেঁটেই নিরপেক্ষতার নিরিখে মেপে বলছি..... যে পুরুষকে গর্ভে ধারণ করে নারী তাকে কোনো তুলাযন্ত্রের ডানদিকের পাল্লায় বসিয়ে বাঁদিকে যতই ওজন চাপানো হোক না কেন ডানদিকের পাল্লা ধরিত্রীর বুকের দিকেই হেলবে।
ট্রেন, প্লেন,রকেট, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান,ট্যাক্সি,অটো,রিক্সা,.... সব কিছু চালানোর ক্ষমতা রাখে যে লিঙ্গের মানুষটি তাকে কী করে কোনও তুলনায় বসিয়ে দড়িটানাটানি খেলার প্রতিপক্ষ ভাবা হয়!
সে মাতৃগর্ভে কন্যাভ্রূণক্ষণ থেকেই কয়েক মাইল এগিয়ে থাকে কারণ সেও আগামী দিনের কোন নবজাতকের সৃষ্টিকর্ত্রী যেই ক্ষমতা কোনো পুরুষের কস্মিনকালেও ছিল না, আগামীতেও হবে না।
তবু আজও শিশুপুত্র জন্মালে হুলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনির দামামা বাজে। আজও মেয়ের বিদায়বেলায় দুমুঠো চাল মায়ের আঁচলে ছুঁড়ে মায়ের সারা জন্মের ঋণশোধ করাকে বিয়ের একটা আচার হিসেবে মানা হয়। বৌভাতের দিন কোনো কর্মরতা মেয়ের হাতে ভাতের থালা ও কাপড় দিয়ে তার সারা জন্মের ভাতকাপড়ের দায়ভার তার স্বামী নেয়।
কী হাস্যকর এ প্রথা! স্বামীর আয় যদি স্ত্রীর চাইতে কম হয়,তবে সেই স্ত্রী একইরকমভাবে তার স্বামীর হাতে ভাত ও জামাপ্যান্ট ধরিয়ে তার সারা জীবনের দায়ভার গ্রহণ করার অনুমতি সমাজপতিরা দেন!
তাহলে ঘটা করে একদিনের জন্য 'নারী' কে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কী প্রয়োজন!
সে তো প্রতিদিনই দশভুজা। রণমত্তা, রণপ্রিয়া।
তাই,,নারীদিবস কথাটি শুনলেই আমার মনে হয়.... নারী the boss.