Logo
logo

সাহিত্য / কবিতা

কবিতা - বারো মাসে তেরো পার্বণ


বারো মাসে তেরো পার্বণ,
বাঙালির প্রাণে ছড়ায় আলোর মন।
ঋতুর সাথে তাল মিলিয়ে,
হাসি-আনন্দ মিশে যায় প্রাণের তালে।

বাঙালি বলে — “উৎসবই প্রাণ!”
বারো মাসে তেরোটার টান।
গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীতের বেলা —
সব ঋতুতে লাগে আনন্দের মেলা।

চৈত্রে চৈত্রসেল, রঙের খেলা,
পয়লা বৈশাখে নব রঙের ভেলা।
জ্যৈষ্ঠে আসে গরমে হাঁসফাঁস,
তবু আম-কাঁঠাল খাওয়ার উৎসব — স্পেশাল ক্লাস!

পাঁপড়-চায়ের আড্ডা ধরে,
ভাদ্রে মন চঞ্চল হয়ে ওঠে।
আশ্বিনে ঢাক বাজে দূর-দূরান্তে,
মা আসেন তখন বাহনে।

কার্তিকে দীপাবলির আলো,
ভাইফোঁটার দিনে মিষ্টির ভালোবাসা ভালো।
দীপ জ্বলে তখন ঘরে ঘরে,
আলো ছড়ায় কালীপূজোর রঙে ভরে।

অগ্রহায়ণ মানে পাকা ধানের হাসি,
পৌষে পাটিসাপটা পিঠেতে ভালবাসি।
মাঘে শীত ঢোকে লেপের কোলে,
তবু সরস্বতী পুজোয় সাজগোজ চলে।

ফাল্গুন মানে প্রেম আর রং,
ফাগুয়া গানে বসন্ত ঢং!
চকলেট ডে, টেডি ডে, নতুন ঢঙে —
প্রেম জমে ওঠে ফেব্রুয়ারির রঙে।

ভ্যালেন্টাইন মানে গোলাপ চাই,
ইনস্টাগ্রামে ছবি ফিল্টার সহ ভাইরাল হয়।
তবু শ্রাবণে বাজে চুড়ির খেলা,
লালপাড় শাড়ি, আলতা পায়ে উৎসবের মেলা।

আবার কখনো রাতজাগা কোলাহল,
বৃষ্টিভেজা প্রতিবাদ, প্ল্যাকার্ডে জল।
মিছিলে পা মেলে হাঁটে যে প্রাণ —
সেইখানেও বাজে উৎসবের গান।

চায়ের কাপ হাতে আলোচনা গড়ে —
“চুপ থাকব না”, সে ডাকও পড়ে।
আবেগে, রাগে, প্রতিবাদে রং —
বাঙালির উৎসব সাহসেও ঢং!

কেউ ব্রত রাখে, কেউ কল্পতরু মানে,
কেউ সারাদিন মাঠে খেলা দেখতে জানে।
স্টেডিয়ামে গলা ফাটে, সিনেমা হলে ভিড় —
বাঙালি উৎসবে মেতে থাকে — শান্ত, চঞ্চল, ধীর।

কেউ উপোসে, কেউ জলভাতে,
কেউ বলে — “আজ মাঠ গরম বাতাসে!”
এই তো জীবন, এই তো ধ্বনি —
বাঙালির রক্তে উৎসব ধরণী।

সংসার-সন্তানে বাঁধা জীবন,
তবু তাতেও উৎসবের ছন্দে সজীব মন।
ভাতের হাঁড়ি, দুধের বোতল, স্কুলের ব্যাগ —
এই নিয়েই তো বাঙালির দিনযাপন ভাগ।

বাচ্চার হোমওয়ার্ক, অফিসের তাড়া,
তার মাঝেও থাকে পুজোর বাজনার ধারা।
সংসারই তো সবচেয়ে বড়ো মেলা —
যেখানে প্রতিদিন উৎসব খেলা!

Contact US

Tel: 9903329047 / 8697419047
Email: sreemotirdarbar@gmail.com