প্রকৃতির পুজারী রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন, বাংলাদেশে আক্ষরিক অর্থে যা প্রকৃতির লীলাভূমি। আধুনিক যুগের চাপে যখন মানুষ প্রকৃতিকে ভুলতে বসেছিল তখন রবীন্দ্রনাথের হাত ধরেই মানুষ প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসে।
রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, তিনি প্রকৃতি জীবনের অবিচ্ছেদ্য
অংশ। তিনি মনে করতেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সম্ভব। অন্তরকে নির্মল ও উজ্জ্বল করতে হলে প্রকৃতিকে উপলব্ধি করতে হবে। তাই তিনি শান্তিনিকেতনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন।
১৯১৬ সালে জাপান যাওয়ার সময় সমুদ্রপথে তেল নিঃসরণ দেখে প্রথম পরিবেশের উপড় প্রভাব বিস্তার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
এই কারণবশত শান্তিনিকেতনে বর্ষামঙ্গল, ঋতুরঙ্গ, শারদোৎসব, বসন্তোৎসব ইত্যাদি উৎসবের মাধ্যমে মানুষের স্বার্থে হারিয়ে যাওয়া সূত্রটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হন।
আমাদের চিরন্তন সঙ্গী সূর্য, চন্দ্র, তারা, জল, মাটির মধ্যে যে বিশ্বরূপ প্রতিভাত হয় সেটি রবীন্দ্রনাথ আমাদের চিনিয়ে ছিলেন। তাঁর প্রতিটি গান, কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প এর প্রকৃষ্ট উদাহরন।
তার গানগুলির মধ্যে- "এসো হে বৈশাখ এসো এসো", একই আকুলতা ভুবনে একি চঞ্চলতা পবনে, "তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা"।
কবিতা গুলির মধ্যে ছিল-
"আজি আমার প্রনতি গ্ৰহন করো পৃথিবী শেষ নমস্কার"।
"ফলসঞ্চয়" কবিতায় স্পষ্ট বলেছেন, প্রকৃতির কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়।
"বলাই" নামক ছোটগল্পে একটি অল্পবয়সী ছোলের শিমুল গাছের প্রতি ভালোবাসা তারই প্রমাণ বহন করে।
"রক্তকরবী" লেখার উৎসাহ পেয়েছিলেন একটি দৃশ্য দেখে যেখানে একটি বাতিল লোহা রক্তকরবী গাছকে পিষে দিয়েছিল।
"বনবানী"কাব্যগ্ৰন্থে তিনি বলেছেন - অন্ধ ভূমি গর্ভ হতে শুনেছিলেন সূর্যের আহ্বান প্রানের প্রথম জাগরনে তুমি বৃক্ষ আদি প্রান।
তাঁর সাহিত্যে প্রতিনিধিত্ব করেছিল প্রকৃতি। প্রকৃতির পুজারী হয়ে তিনি অর্ঘ্য দান করেছেন নানা লেখনী সৃষ্টির মাধ্যমে।
সব শেষে বলবো তিনি আপামর বাঙালীর ঠাকুর আমাদের সকলের রবিঠাকুর। তিনি প্রকৃতির সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন সখ্যতা ও আত্মার আত্মীয়তা যা গান, কবিতা, গল্প, কাব্য, প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি অমর হয়ে থেকে গেছেন প্রতিটি মানুষের মনের মণিকোঠায়। তার ব্যপ্তি অসীম।তাঁকে কোন সীমায় বেঁধে রাখার ক্ষমতা আমাদের কারুরই নেই। তাই তিনি "সীমার মাঝে অসীম"