প্রকৃতিপ্রেমিক রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমস্ত কবিতা,গান,গল্প পরে বুঝেছি তিনি প্রকৃত প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন।বারবার নানা ভাবে আক্রমণের কারণে এই পৃথিবী যে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সে কথা রবীন্দ্রনাথ নানা লেখায় লিখে গেছেন। তিনি ‘অরণ্য দেবতা’তেই লিখেছেন, “... ভারতবর্ষের উত্তর-অংশ তরুবিরল হওয়াতে সে অঞ্চলে দানকে গ্রহণ করেছে, সে নির্মমভাবে বনকে আবার নির্মূল করতে পিছপা হয়নি।তার ফলে আবার মরুভূমিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ হয়েছে।”
মানুষ প্রকৃতিকে দখল করতে সদাই উদগ্রীব। কবির প্রশ্ন শুধুই নিজের লাভের জন্য তার এই উদ্যোগে যে প্রকৃতি কতোটা কষ্ট পায় তা কি মানুষ অনুমান করতে পারে? যে পাখিটি মানুষের খাঁচায় বন্দি থেকে থেকে আকাশে উড়বার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে তার দুঃখের কথা রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কে বুঝেছেন এমন করে? আত্মশক্তির এই অবনমনের কষ্ট তাঁর মতো আর কেই বা এমন গভীরভাবে অনুভব করেছেন? একই ভাবে একটি ফুল ছিঁড়ে নেবার পর তার রং বিবর্ণ হবার দৃশ্যটি ক’জন মানুষই বা সেভাবে দেখতে পায়।কিন্তু ঐ ফুলের মনোকষ্ট রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কেউ কী এমন গভীরভাবে দেখেছেন? মানুষ মনে করে ফুল তোলা তার অধিকারের মধ্যেই পড়ে। যদিও ঠাকুরের পায়ে দেওয়ার জন্য ফুলের দরকার হয়। প্রকৃতিকে সাজিয়ে দিয়েছেন ঠাকুর। কিন্তু সেই ফুল নারীদের মাথায় শোভা বর্ধন করে কিছু সময়ের জন্য। তারপর তা মূর্ছা যায়। তাই তিনি বলেছেন বন্যরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।
রবীন্দ্রনাথ বরাবরই নদীর সাথে জীবনের তুলনা করতেন। নদীর প্রবাহের মাঝে মানুষের জীবনচলার সম্পর্ক তিনি খুঁজে পেতেন।
তার লেখার মাধ্যমে মানুষের অবচেতন মনে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ব পালন করতে তিনি শিখিয়েছিলেন মানুষকে।