আমার পরম প্রিয় রবীন্দ্রনাথ

"আমার সকল নিয়ে বসে আছি,সর্বনাশের আশায়,আমি তার লাগি পথ চেয়ে আছি,পথে যে জন ভাসায়।যে জন দেয় না দেখা,যায় যে দেখে ভালবেসে আড়াল থেকে,আমার মন মজেছে,সেই গভীরের গোপন ভালবাসায়"। ভালবাসার মর্মার্থ তাঁর মত করে কেউ হয়ত বুঝিয়ে যায় নি,যাকে ছাড়া বিশ্বসাহিত্য অচল আজও।প্রেমের গানেও তিনি,বিরহের কবিতাতেও তিনি।জীবনের গল্পেও তিনি,মৃত্যুর যবনিকাতেও তিনি।আজও তার প্রতিটি সৃষ্টি সমানভাবে প্রযোজ্য।।তাইতো আজও গঙ্গাজলে গঙ্গা পুজোর মতই তাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর জন্য তাঁরই সৃষ্টির কাছে আমদের ঋণী থাকতে হয়।। শুধু উনি কেনো,আমাদের প্রতিটি উৎসব,অনুষ্ঠান,বা শোক সকল কিছুর জন্যই বোধহয় তিনি কোন না কোনো সৃষ্টি ঠিকই করে গেছেন।। তাঁর প্রকৃতি প্রেম আজ ও আমাদের কাছে শিক্ষণীয়। আকাশে সূর্য ওঠে প্রতিদিন,আমরা সূর্যের স্নেহ পাই প্রতিদিন,সূর্য ছাড়া যেমন আমাদের একদিনও চলে না,তেমনি আমাদের আছেন একজন যাকে ছাড়া আমাদের একদিনও চলবে না,তিনি আমার প্রতিদিনের সূর্য,আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।। তিনি আমাদের জীবন আজ আলো দিয়ে চলেছেন,তিনি বাংলা ভাষার শ্রেষ্ট কবি।শুধু তাই নয়,তিনিই আমাদের সব।তিনি কবিতা লিখেছেন,লিখেছেন গান,গল্প লিখেছেন,নাটক লিখেছেন,প্রবন্ধ রচনা করেছেন ।তিনি কি লেখেন নি,তিনি একাই বাংলা সাহিত্যকে কয়েকশ বছর এগিয়ে নিয়ে গেছেন।। প্রকৃতির সাথে বিশ্বকবির সখ্যতা/বোঝাপড়া আজীবনের।তিনি এমন এক সময়ে প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর কথা বলতেন,যখন বিশ্বে পরিবেশ আন্দোলন দানা বাঁধে নি।।তিনি বরাবরই প্রকৃতি ও সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার পক্ষে ছিলেন। তাই তিনি এই নিয়ে লিখেছেন,বলেছেন,এবং বাস্তবায়নে নানা রকম সlমাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ভারসাম্য রক্ষার্থে । এই শতাব্দীর শুরুতেই তিনি পরিবেশ নিয়ে গভীর ভাবে ভাবতে শুরু করেছিলেন। পূর্ববঙ্গের নিজেদের জমিদারি এস্টেটের কাজে তাকে নদীবক্ষে নৌকায় ভ্রমণ করতে হত। নদীবক্ষে ভ্রমণের সময় নানারূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তাকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছিল।এবং তিনি প্রকৃতিকে নতুন ভাবে উপলব্ধি করেছিলেন।মাথার উপরে তারায় ভরা আকাশ,নিচে নিস্তব্ধ পরিবেশ। রাত্রে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক,জোনাকির আলো, ভোরে পাখির কলতান তাকে এক অন্ত জগতে পৌঁছে দিয়েছিল, যার প্রমাণ তার বহু সৃষ্টিতেই বিদ্যমান।।তার বিশ্বাস ছিল প্রকৃতির দান ও মানুষের জ্ঞান মিলেই গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। বিশ্বকবির প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা ও সৌন্দর্যের গভীরতা খুঁজে পাওয়া যায় তার সাহিত্যকর্মে। তার লেখা,"চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, আমাদের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। প্রকৃতি ও পৃথিবী কে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে লেখা গান, ও শান্তিনিকেতন গঠন করার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতি ও মানবের সহবস্থান করার ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে জীবন চলা শিক্ষাদানের লক্ষ্য পূরণে ও সফল হয়েছেন। সারা পৃথিবী আজ তার এই প্রকৃতি প্রেমের আদর্শ অনুসরণ করে চলেছে।।