প্রকৃতি পিয়াসী রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রকৃতি প্রেমিক। বর্ষা ছিল তার প্রিয় ঋতু। ছিন্নপত্র থেকে জানা যায় কবির প্রকৃতি ভাবনা। ১৮৮৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮৯৫ এ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ৮ বছর কয়েক মাসের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তার ভাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীকে অনেকগুলো চিঠি লেখেন । পূর্ব বাংলার শিলাইদহ, শাহজাদপুর ও পতিসর থেকে এই চিঠি গুলি পরবর্তীতে ছিন্নপত্র নামে সাহিত্য আকারে প্রকাশিত হয়। ছিন্নপত্র রবীন্দ্র সাহিত্যে অনন্য স্থান করে নিয়েছে । সেখানে কবির প্রকৃতি ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। ছিন্নপত্রে দেখা যায় কবি ইন্দিরা দেবী কে লিখছেন -পদ্মাকে আমি বড় ভালোবাসি। ইন্দ্রের যেমন ঐরাবত আমার তেমন পদ্মা। কবি পদ্মা পাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য বর্ণনা করেছেন ।
পদ্মা পাড়ের অপূর্ব সৌন্দর্য্য ,নদীর চর ,আকাশ ,নিস্তব্ধতা ,বালিরাশি , সেখানকার লোকজন জীবনধারা, প্রাণের গভীর থেকে অনুভব করেছেন । কবি বলেছেন সন্ধ্যা বেলায় পদ্মার চর আশ্চর্য স্বপ্নের মত লাগে ।কত দিন তিনি বজরা নিয়ে নদীতে রাত্রে একা একা ঘুরে বেড়িয়েছেন ,প্রকৃতির নিস্তব্ধতা উপভোগ করার জন্য। কবি প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন বলেই লোকোজ ও বাউল গানের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরবর্তীতে তার অনেক গানেই আমরা বাউল গানের ছোঁয়া পাই। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার ভাবনা ও এরই একটি অংশ। তিনি চেয়েছিলেন প্রকৃতির সাথে মিশে, প্রকৃতিকে চিনে, প্রকৃতিকে ভালোবেসে শিক্ষার্থীরা যেন বিদ্যা লাভ করতে পারে । এবং তিনি সেই লক্ষ্যই কাজ করে গেছেন। তার অসংখ্য গল্প, কবিতা ,গানে আমরা প্রকৃতিকে খুঁজে পাই। বর্ষা ছিল তার প্রিয় ঋতু ,তাই বুঝি বর্ষাতেই আমাদের প্রাণের কবি চলে গেছেন তার আপন ঠিকানায়।