নিউ-নর্মাল জীবনের সাথে উৎসবের আহার, রইল কিছু টিপস
পূজো আসতে আর হাতে গোনা কিছু দিন বাকি। করোনা ভাইরাসের আগমন এই বছরের উৎসবের আগমনে যে এক আমুল পরিবর্তন আনতে চলছে, সে আর কারুর অজানা নয়। তা পরিবর্তন যাই হোক না কেন, বারো মাসে তেরো পার্বণ-এ বিশ্বাসী বাঙালি যে নতুন ধরনের জীবনযাত্রা-র সাথে উৎসবকেও নতুনভাবে আমন্ত্রণ জানাবে, তা বলাইবাহুল্য। আর যে কোনো উৎসব মানেই তার সাথে নানা স্বাদের নানা পদ রসনাতৃপ্তিতে অনিবার্য, তা সে বাড়িতেই হোক বা হোটেল-এ।
কিন্তু এই বছরের পরিস্থিতিতে উৎসবের এই দিনগুলোতে বাইরে খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই অতিরিক্ত সাবধানতা নেওয়া প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, যেকোনো উৎসব মানেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাওয়া-দাওয়া বা শরীরচর্চাতে কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটেই। তাই উৎসবের এই দিনগুলোতে বা উৎসবের আগে ও পরে নিজেকে সুস্থ-সুন্দর কিভাবে রাখবেন, তারই কিছু টিপস্ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
*যেকোনো উৎসবের আগে বা পরে নিজেকে সুস্থ-সুন্দর করে তুলতে:*
- ডায়েটে অবশ্যই শাক-সব্জি, ফল রাখবেন, কারণ শাক-সব্জি বা ফল-এ বিভিন্ন ধরনের অত্যাবশ্যকীয় নিউট্রীএন্টস্ থাকে, যা আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে, নিজের ওজনকে ঠিক রাখতে সাহায্য করবে, ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
- জল খাবেন সঠিক পরিমাণে, যা শরীরের বর্জ পদার্থগুলোকে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে, কিডনিকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে, ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করবে, এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করবে। জলের সাথে আপনি অন্যান্য তরল পানীয়ও খেতে পারেন যেমন: ডাবের জল, লস্যি, ছাতুর সরবত ইত্যাদি।
- ইমিউন সিস্টেম কে ভালো রাখতে ডায়েটে টক দই, ভিটামিন- সি, ই, বি জাতীয় খাবার, স্যালাড অবশ্যই রাখুন।
- উৎসবের দিনগুলিতে নিজেকে ফিট রাখার জন্য ব্যয়াম বা হাঁটাহাঁটি নিয়ম মেনে সেরকম হয় না বল্লেই চলে। তার ওপর খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম ও খুবই স্বাভাবিক। তাই উৎসবের আগে বা পরে অবশ্যই নিয়মিত ৪৫-৬০ মিনিট এক্সারসাইজ করুন বা যোগা করুন, যা আপনাকে মানসিক বা শারীরিক ভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
** যেকোনো উৎসব মানেই কিন্তু খাবারের একটা অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকেই। আর খুব বেশি অনিয়ম মানে তা আপনার শরীরে প্রভাব ফেলবেই, তাই অবশ্যই উৎসবের আগে বা পরে নিজেকে সুস্থ-সুন্দর রাখতে ডায়েটে পুষ্টিকর খাবারকে রাখুন।
*উৎসবের দিনগুলিতে নিজেকে সুস্থ রাখার উপায়:*
এই বছরের পূজো যে অন্যান্য বছরের থেকে আলাদা হতে চলেছে, সেটা সবারই জানা। আর তার একটা প্রভাব যে বাঙালির ভূরিভোজেও পরতে চলেছে তা বলাইবাহুল্য। তাও উৎসবের দিনগুলিতে বাড়ির বাইরে গেলে কিছু একটু খেতে ইচ্ছা হতেই পারে, সে ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবশ্যই নেবেন। যেমন ধরুন:
- উৎসবের দিনগুলিতে কোথাও খেতে যাওয়ার আগে সেই জায়গা সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ নিয়ে যান। সঠিকভাবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে কিনা।
- রাস্তার খাবারকে এড়িয়ে চলুন। পোড়া তেলে বানানো ভাজা জাতীয় খাবার যতটা পারবেন এড়িয়ে চলুন। কারণ এই পোড়া তেল শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
- জল অবশ্যই নিয়ে বেরোন বা বাইরে খেতে হলেও সীল করা জলের বোতল কিনে খান।
- দীর্ঘক্ষণ বাইরে পরে থাকা রান্না করা খাবারকে এড়িয়ে চলুন। যে খাবার গরম অবস্থায় তৈরি করে আপনাকে পরিবেশন করা হবে সেই খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- জল অবশ্যই বেশি করে খাবেন।
- রোজ বাইরের খাবার না খেয়ে চেষ্টা করুন কিছুদিন বাড়িতে বানানো খাবার খেতে। যা আপনার পেটকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে। তার সাথে খাবারের পরিমাণের ওপরও নজর রাখুন।
- বাড়িতে রোজ না হলেও দু-তিন দিন অন্তর অল্পসময়ের জন্য হলেও এক্সারসাইজ করুন বা যোগা করুন।
- যাদের হজমের সমস্যা আছে, তারা অত্যাধিক তেল মশলা জাতীয় খাবারকে যতটা পারবেন এড়িয়ে চলুন।
- সবশেষে, অবশ্যই যখন বেরোচ্ছেন মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিতে ভুলবেন না এবং অবশ্যই ভিড়কে এড়িয়ে চলুন।
যেকোনো উৎসব মানেই তার সাথে প্রতিটি মানুষের ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতি, আনন্দ জড়িয়ে থাকে। এই বছরের উৎসব অন্য বছরের তুলনায় আলাদা হলেও তা অনুভূতিতে কোনো প্রভাব ফেলার নয়। শুধু নিজেকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই সতর্কতা মেনে চলুন যাতে এই আনন্দ অনুভূতিকে আরও সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারেন।