রবীন্দ্রনাথ ও প্রকৃতি মুগ্ধতা
ছোট থেকেই তারই গানে, গল্প, নাটকে বড় হওয়া। প্রতিটি বাঙালীর কাছে তিনি এক মহান মানুষ। যার জন্মদিনে আমরা তার ই লেখা অসংখ্য রচনার দ্বারা সে গান , কবিতা, নাটক, শ্রুতি নাটক, ছোটগল্প, উপন্যাসের মাধ্যমে উদযাপন করি। এককথায় আমরা মাছের তেলের মাছ ভাজি সকল বাঙালি সমাজ। তাকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই তিনি এমন ই ব্যাক্তিত্ব। নিজের স্বল্প জানা থেকে সেই মহামানবের প্রকৃতি প্রেম নিয়ে লেখার স্পর্দ্ধা করলাম।
প্রকৃতির সাথে যার বোঝাপড়া আজীবন সে আর কেউ নয় আমাদের প্রানের কবি, হৃদয়ের একদম কাছের,বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
নদীতে বা বিলে নৌকায় করে সকাল ও রাত্রের প্রকৃতির সৌন্দর্য নিতে তিনি প্রায়ই থাকতেন নদীবক্ষে নৌকায়। নৌকায় ভ্রমনে পদ্মা বোটে কাটানো প্রতি টি রাত তার চারধারের প্রকৃতি ও জীবনকে নতুন করে তিনি চিনতেন।
উন্মুক্ত তারায় ভরা আকাশ, নিস্তব্ধ চারিদিক তার মাঝে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক , হরেক বৈচিত্র্যময় আশ্চর্য জনক সব রাতের আওয়াজ, তার পর রাতের অন্ধকার কে কাটিয়ে সূর্যের আগমনে সকালের হেসে ওঠা হাজার পাখির কলতান, নদীর জলে গ্রাম্যবধূদের বাসনবাজতে আসা বাসনের শব্দ তাদের হাতের চুড়ির আওয়াজ, শেষে স্নানের জন্য জলের ছড়িয়ে পরার ,শব্দবধূদের সকলে সূখদুঃখের গল্প, কবির প্রকৃতির ও মানুষের এই মিলন অনুভব করেছেন সম্মিলিত ভাবে।
আর তার রচনায়, গানে, কবিতায়, ছোট গল্পে, চিঠিতে, উপন্যাসে, নাটকে এই প্রকৃতির নদী ও নারী বারবার স্থান পেয়েছে।
তবে কবির চিঠিতে আমরা প্রকৃতির রূপ রসের বিভরতা লক্ষ্য করি। প্রকৃতির বিপর্যয় ও যে কতটা মানুষের উপর প্রভাব ফেলে কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে তা তার মনে গাঁথে একটি তেলবাহী জাহাজের সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পরলে সমুদ্রের মাছ ও সামুদ্রিক প্রানীর বাঁচার আপ্রাণ বাঁচার প্রচেষ্টা দেখে।
প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং সৌন্দর্যের গভীরতা খুঁজে পাওয়া যায়।
তার সাহিত্য কার্যে তার গান
" চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে " গান টিতে যে প্রকৃতির সন্ধান আমরা পাই তা আমাদের মনোজগতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে তার প্রকৃতি পর্যায়ের লেখা গান তার প্রকৃতি ও পৃথিবীর তে
সংরক্ষনের আহ্বানে ভরা, প্রকৃতি কে ভালোবেসেই কবির শান্তিনিকেতন গড়া। প্রকৃতির কোলেই তিনি পড়াশুনা খোলা আকাশের নীচে নববর্ষ, পৌষ মেলা, বসন্ত উৎসব প্রচলন করেছিলেন সব ই প্রকৃতিকে ভালোবেসেই।
তাইতো কবি ১৯২৭ প্রকৃতির প্রথম গভীর ভালোবাসা থেকেই বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের সূচনা, কবির রচিত বলাই গল্প টাতে যে শিমূল গাছটি ও বালকের প্রেম দেখা যায় তা মানুষ ও প্রকৃতির গভীর বন্ধনের কথাই বলা হয়।
খাঁচার পাখি আর বনের পাখির দুই পাখি কবিতায় খাঁচায় আবদ্ধ পাখির মনোবেদনা ও স্বাধীনতা হীন তার দুঃখ তুলে ধরে। তাঁর লেখার অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল প্রকৃতি। কবির যাত্রা পথে প্রথম সঙ্গী ছিল প্রকৃতি।
প্রকৃতির সৌন্দর্য কবিকে নানাভাবে আকৃষ্ট করত সব সময়।
শরতের আকাশের মেঘ মনস্নানের দেখা পেয়ে শুধু নয়ন ভরেনি মন ও পুলকিত হয়েছিল কবিগুরুর
"আজ ধানের ক্ষেত্রে রৌদ্র ছায়ায় " গানটিতে নীল আকাশে সাদা মেঘের পেজা তুলোর ভেলা কবির মনকে নাচিয়ে ছিল তাই তো লেখা হয়েছিল মানুষের প্রকৃতিগত ঝোঁকটাকে বলা হয় প্রকৃতিগত অনুপ্রেরণা প্রকৃতির প্রেমের শহরের জীবনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লেখেন -----"দাও ফিরে সে অরণ্য"
প্রকৃতির সম্পদ মানুষ যে অন্যায় ভাবে নষ্ট ও ব্যবহার করে পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট করছে তা তিনি আগেই লিখে গেছেন। তাইতো জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষমতার প্রভাব আজ সারা বিশ্বব্যাপী। মানুষ খবরদারি করবে প্রকৃতির উপর কবি তা চাইতেন না।
তার ছোটগল্প গুলিতে প্রকৃতির ছড়াছড়ি, প্রকৃতি যেমন রহস্যময় রবীন্দ্রনাথ সে রহস্য উদঘাটতে সফল ব্যাক্তি। তিনি প্রকৃতি ও মানবের মাঝে প্রথম সফলভাবে সভ্যতার গড়ে দিয়েছেন সত্যিই এক প্রকৃতিময় বিস্ময়কর নাম কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার প্রতিটি রচনায় যেন প্রকৃতি ও প্রেম মিলেমিশে একাকার।