Logo
logo

শ্রীমতির দরবার

'শ্রীমতি' - এই শব্দটির মধ্যে নিহিত রয়েছে একটি পরিপূর্ণ নারীর প্রতিচ্ছবি, সেই নারী যে নিজের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন সময়ে নিজের কর্তব্যের অঙ্গীকার স্বীকার করে চলেছে যুগ যুগ ধরে।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আজকের শ্রীমতীরা নানা বিষয়ে এতটাই পারদর্শী যে ঘরে এবং বাইরে --- কোথাওই তাদের হারাবার সুযোগ নেই । হয়ত, তারজন্য সেকালের সুগৃহিণী ঠাকুমা, মা, মাসি, পিসীদের সযত্নে লালিত দামী সংসারজীবনের শিক্ষাটাই দায়ী যা কিনা একজন শিশুকে প্রথমে নারী ও পরে আজকের শ্রীমতি রূপে বিবর্তিত হতে সাহায্য করে ।

নারী সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই কি পারদর্শী ছিল না! অবশ্যই ছিল। তবে, নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেত শুধু সংসারের চার দেয়ালের গন্ডির ভেতর , তাই তার প্রস্ফুটিত গুণে মুগ্ধ হয়ে নির্দ্বিধায় আমরা আজও বলে ফেলি --- " সংসার সুখের হয়, রমণীর গুণে"।

কিন্তু আজকের নারী 'খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার' এর বাইরে পা বাড়ায় তার নিজস্ব সত্তাকে সমাজের কাছে তুলে ধরার জন্য।

একজন নারী তখনই শ্রীমতী হয়ে ওঠে..... যখন একই সাথে তার শ্রী ও কর্মকান্ড, দুটোই সমানভাবে মানবসমাজে গৃহীত হয়।

"যে রাঁধে,সে চুলও,বাঁধে" ----- নারীর এই সংজ্ঞার এখন ব্যাপ্তি ঘটেছে। আজ সে শুধু যেমন তেমন রাঁধে না....দেশী, বিদেশী নানা ধরণের পদ অনায়াসে তুড়ি মেরে খাওয়ার টেবিলে সার্ভ করতে জানে। সে জানে মনের কল্পনাকে তুলির টানে রাঙিয়ে তুলতে। জানে, প্রকৃতি থেকে মানব মুখবিবরকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে তার ক্যামেরার লেন্সে ক্লিক করে রাখতে। জানে নিজের চিন্তাধারা ও উপলব্ধিকে কাগজ কলমে ব্যাক্ত করতে । এককথায় আজকে ' শ্রীমতি ' রা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য !

আজকের নারীদের এমন বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে তাই আজ সামিল 'শ্রীমতির দরবার'।
একবার এসে উঁকি দিলেই বুঝবেন.... এ কোন রাজরাজড়ার দরবারের চেয়ে কম ঐশ্বর্যবান নয়!
এখানে উপরি পাওনা হিসেবে আছে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগও।
কী! এখন মনে হচ্ছে না! আমিও হয়ে যাই এই দরবারেরই সদস্য! তাহলে আর দেরী নয়। চলে আসুন। আমরা আমাদের হাত বাড়িয়ে রইলাম আপনাদের হাতের স্পর্শের অনুভূতি পাওয়ার অপেক্ষায় !!!!

সম্পাদকের মননে

নারীদিবস নাকি নারী the boss!
একটা অনুষ্ঠানের শেষ অংশটুকুতে একজন সঞ্চালিকা এই কথাটাই বলছিলেন..... একদম আমার মনের কথা।

চকোলেট দিবস,ভালোবাসা দিবস,হাগ ডে ( বঙ্গানুবাদ নিয়ে চাপ আছে).....ব্যাঙের ছাতার মতোন নানা দিবসের প্রাদুর্ভাব ঘটে থাকলেও নারীদিবস নিয়ে অহেতুক আদিখ্যেতা না দেখানোই ভাল।

কারণ পুরুষ এগিয়ে না নারী? নাকি নারী-পুরুষ সমান অধিকার? এসব এখন ক্লিশে সাবজেক্ট। বহুচর্চিত, বহুআন্দোলিত ও বহু বিতর্কিত একটি বিষয়। আমি নারীবাদী তকমা না সেঁটেই নিরপেক্ষতার নিরিখে মেপে বলছি..... যে পুরুষকে গর্ভে ধারণ করে নারী তাকে কোনো তুলাযন্ত্রের ডানদিকের পাল্লায় বসিয়ে বাঁদিকে যতই ওজন চাপানো হোক না কেন ডানদিকের পাল্লা ধরিত্রীর বুকের দিকেই হেলবে।

ট্রেন, প্লেন,রকেট, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান,ট্যাক্সি,অটো,রিক্সা,.... সব কিছু চালানোর ক্ষমতা রাখে যে লিঙ্গের মানুষটি তাকে কী করে কোনও তুলনায় বসিয়ে দড়িটানাটানি খেলার প্রতিপক্ষ ভাবা হয়!
সে মাতৃগর্ভে কন্যাভ্রূণক্ষণ থেকেই কয়েক মাইল এগিয়ে থাকে কারণ সেও আগামী দিনের কোন নবজাতকের সৃষ্টিকর্ত্রী যেই ক্ষমতা কোনো পুরুষের কস্মিনকালেও ছিল না, আগামীতেও হবে না।

তবু আজও শিশুপুত্র জন্মালে হুলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনির দামামা বাজে। আজও মেয়ের বিদায়বেলায় দুমুঠো চাল মায়ের আঁচলে ছুঁড়ে মায়ের সারা জন্মের ঋণশোধ করাকে বিয়ের একটা আচার হিসেবে মানা হয়। বৌভাতের দিন কোনো কর্মরতা মেয়ের হাতে ভাতের থালা ও কাপড় দিয়ে তার সারা জন্মের ভাতকাপড়ের দায়ভার তার স্বামী নেয়।
কী হাস্যকর এ প্রথা! স্বামীর আয় যদি স্ত্রীর চাইতে কম হয়,তবে সেই স্ত্রী একইরকমভাবে তার স্বামীর হাতে ভাত ও জামাপ্যান্ট ধরিয়ে তার সারা জীবনের দায়ভার গ্রহণ করার অনুমতি সমাজপতিরা দেন!

তাহলে ঘটা করে একদিনের জন্য 'নারী' কে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কী প্রয়োজন!

সে তো প্রতিদিনই দশভুজা। রণমত্তা, রণপ্রিয়া।
তাই,,নারীদিবস কথাটি শুনলেই আমার মনে হয়.... নারী the boss.

View More

Contact US

Tel: 9903329047 / 8697419047
Email: sreemotirdarbar@gmail.com