Logo
logo

সাহিত্য / কবিতা

প্রবন্ধ - বীরবিপ্লবী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস

আমার চোখে এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা, যিনি ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র। যিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য নিজের সমগ্র জীবন করেছিলেন উৎসর্গ।
তিনি আর কেউ নয় তিনি আমাদের অতি প্রিয় নেতা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস। নেতাজী হলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বা আন্দোলনের মহানায়ক ,তার সাথে তিনি বিপ্লবী আন্দোলনের জ্বলন্ত তরবারি।
ভারতীয় স্বাধীনতার মূল তিনটি ধারা---------
১) জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে অহিংস গন আন্দোলনের ধারা
২) সমস্ত বিপল্পী আন্দোলনের ধারা এবং
৩) অন্যতম ধারা হল বিদেশী শক্তির সাহায্যে যুদ্ধের দ্বারা স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টা।
আর এই অন্যতম ধারাই সুভাষ চন্দ্র বোস অবলম্বন করেন এবং সেই ভাবেই তার আন্দোলন চলে।
গান্ধীজির অহিংস ও সত্যগ্ৰহ নীতি ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য যথেষ্ট ছিলনা। তাই তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামে তার আর্বিভাব উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত-------
শিক্ষাগুরু -বেণীমাধব দাস,
রাজনীতির শিক্ষাগুরু চিত্তরঞ্জন দাস ,
আধ্যাত্মিক শিক্ষা গুরু স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ । আর তাদের অনুপ্রেরণাতেই I. C. S পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান, ও সেই সঙ্গে লোভনীয় চাকরি ত্যাগ করে দেশমাতৃকার কাজে নিজেকে সপে দেন।
ছাত্র থাকাকালীন সুভাষ ব্রিটিশ বিরোধী মন্ত্রে দীক্ষিত হন এবং জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে আইন অমান্য আন্দোলনে সুভাষ চন্দ্র বোস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে হরিপুর কংগ্রেসের অধিবেশনে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ আবার দ্বিতীয় বার সভাপতি নির্বাচিত হন কিন্তু চরম অসহযোগিতায় তিনি তা স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেন। এরপর তিনি১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ৩রা মে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে এক নতুন দল গঠন করেন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ব্রিটিশ সরকার ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ২ রা জুলাই ভারত সুরক্ষা আইনে তাকে গ্রেফতার করেন।
কিন্তু অসুস্থতআর কারনে তাকে কয়েক মাস পর বাসভবনে নজরবন্দী করা হয়।
উল্লম্ফকারী ব্যাঘ্র ছিল তার সেনাবাহিনীর প্রতীক-
সেনাদল তার দেশপ্রেম ও বিপ্লবী আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সর্বপ্রথম তাকে " নেতাজী " অভিধায় ভুষিত করে তাকে " জয় হিন্দ" ধ্বনি দিয়ে অভিবাদন জানায়।
কটক শহরের অভিজাত পরিবারে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে জন্ম।
প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়া কালিন ই তার মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধিতা স্পষ্টতা লক্ষ করায় তিনি বহিস্কৃত হন। পরে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আপসহীন সৈনিক এবং বামপন্থী মনোভাবাপন্ন ছিলেন।
ডঃ আমলেস ত্রিপাঠির মতে --------------
রবীন্দ্রনাথ তাকে দেশ নায়ক বলে গ্ৰহণ করেছিলেন। কেবল ভাগ্যের পরিহাসে তাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছিল।
পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে তিনি কাবুল পৌঁছেছিলেন, সেখান থেকে মস্কো পরে বার্লিনে উপস্থিত হন।
তিনি ভারতকে স্বাধীন করতে জার্মানির সাহায্য চান।
বেতার যোগে বালিন থেকেই ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য ভারতবাসীকে আহ্বান জানান।
জার্মানির প্রবাসী ভারতীয়রাও তাকে নেতাজী বলেই ডাকতেন।
তিনি অনুভব করেছিলেন যে দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার যেকোন দেশ থেকে মুক্তি যুদ্ধ পরিচালনা করা সহজ হবে তাই জাপান যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রবাসী ভারতীয় রাসবিহারী বসু তখন সেখানে জাপানে বন্দী ভারতীয় সৈনিকদের নিয়ে একটি সেনাবাহিনী গঠন করেন। তার দায়িত্বভার সুভাষ চন্দ্রকে নিতে আহ্বান জানান।
এই বাহিনীই আজাদ হিন্দ ফৌজ নামে খ্যাত।নয়টি দেল একে স্বকৃতি দেয়।তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও অনুপ্রেরণায় এর সদস্যরা মনে নতুন প্রেরনা পান।
১৯৪৪ সালে জানুয়ারি তে তিনি ফৌজের প্রধান কর্মকেন্দ্র রেঙ্গুনে স্থানান্তরিত করেন।
তিনি কোহিমায় জাতীয় পতাকা উড়ান , ইংরেজ কে পরাজিত করে দিল্লি দখন ছিল তার পরিকল্পনা।
কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণ তাকে অস্ত্র ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। কিন্তু তার এই স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান অস্বীকার করা যায় না।
তার সাহসিকতার তার দেশপ্রেমের আদর্শ স্বাধীনতা অর্জনকে সহজতর করে।
মাইকেল এডওয়ার্ড তার গ্রন্থে হ্যামলেটের পিতার ন্যায় সুভাষ বসুর প্রেতাত্মা যেন লালকেল্লার চত্ত্বরে ঘুরছিল তার বৃহদাকার প্রতিকৃতি সভাকক্ষে যে ত্রাস আনে তাতেই স্বাধীনতার পথে উত্তর সুগম হয়। দুঃসাধ্যের সাধক, দূগম পথের নির্ভীক এই যাত্রীকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ আর্শিবাদ করে বলেছিলেন--------
" সুভাষ চন্দ্র বাঙালি কবি আমি, বাংলা দেশের হয়ে তোমাকে দেশ নায়কের পদে বরণ করি"
তার আজাদ হিন্দ ফৌঁজ পাঁচটি ব্রিগেডে বিভক্ত হয়ে যায় ----
গান্ধিব্রিগেড
আজাদ "
নেহেরু "
সুভাষ "
ঝাঁসির রানি ব্রিগেড
সুভাষের সেই আওয়াজ " চলো দিল্লি চলো"
আর " তোমরা আমার রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দিব "
আজ ও সকলে কানে ধ্বনিত সদাসর্বদা।
পিতা জানকীনাথ বসু, মাতা প্রভাবতি দেবী র যোগ্য সন্তান তিনি।
তার লেখা একটি গ্রন্থ হল " তরুনের স্বপ্ন"।
জিয়াউদ্দিন ছদ্মনামে তিনি তার ভাইপো শিশির বসুর সঙ্গে দেশ ছেড়েছিলেন। রটনা ১৯৪৫ খ্রী ১৮ই আগষ্ট তাইহকু বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। কিন্তু তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়না।
তিনি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দুটির নাম দিয়েছিলেন" শহীদ ও স্বরাজ"।
তিনি আরো বলেছিলেন ------- আমি মনে করি " যে অ
নিয়ন্ত্রিত দেশগুলোর বাসিন্দা ভারতীয়রা তাদের মাতৃভাষার জন্য সব্বোর্চ সেবা দেবেই" ।
এইরুপ নেতার চরণে আমার শতকোটি প্রনাম ।

Contact US

Tel: 9903329047 / 8697419047
Email: sreemotirdarbar@gmail.com